সাব্বির হোসাইন। সুনামগঞ্জের নারায়ণপুরে জন্ম। জীবনসংগ্রামের সঙ্গে পরিচয় ঘটে ছোটবেলাতেই। ২০১৯ সালের আগপর্যন্ত এই সংগ্রামের সঙ্গেই জীবন জড়িয়ে গিয়েছিল। পকেটে একটা টাকাও নেই—বন্ধুর সঙ্গে রাস্তায় হেঁটেছেন মাইলের পর মাইল। মাঝেমধ্যে কোনোভাবে পকেটে খুচরো কিছু টাকা চলে এলেও তা নিয়ে উল্টোপাল্টা খরচ করতেন না সাব্বির। সেই টাকায় মুঠোফোনে নেট কিনে টিউটোরিয়াল ভিডিও দেখতেন। সেই সময়েই বাস্তবতা তাঁকে শিখিয়েছিল—পকেটশূন্য মানুষের কাছে পৃথিবী বড় ধূসর। আর এখন নিজে ফ্রিল্যান্সিং করে আয় করেন। সেই টাকায় পড়তে গেছেন জার্মানিতে।
২০১৮ সালে ইন্টারনেটের সেবা এমন সহজলভ্য ছিল না। ঘরে ঘরে ইন্টারনেট, ওয়াই–ফাই দুর্লভ ছিল। ইন্টারনেট চালানোর সবচেয়ে সহজ মাধ্যম ছিল মুঠোফোনে এমবি কেনা। কিন্তু শুধু এমবি কিনলেই তো হতো না। ইন্টারনেট–সংযোগ ছিল না। থাকলেও সমানভাবে নেটওয়ার্ক পাওয়া যেত না সব জায়গায়। ঠিকভাবে ইন্টারনেট পেতে অনেক সময় মুঠোফোন জানালার সামনে রেখে দিতে হতো। তবু লেগে ছিলেন সাব্বির। হাতে টাকা এলেই মুঠোফোনে এমবি কিনে ফ্রিল্যান্সিংয়ের টিউটোরিয়াল দেখার সেই নেশাই আজ তাঁর দারিদ্র্য দূর করেছে, তাঁকে সফলতা দিয়েছে।
মাঝেমধ্যে জীবনের এমন সব বাঁকে সাব্বির নিজেকে আবিষ্কার করেছিলেন, মনে হয়েছিল, সব শেষ বুঝি। যেমন ২০১৬ সালে এইচএসসি পরীক্ষার পর আর্থিকভাবে প্রচণ্ড দুরবস্থার মধ্যে পড়ে তাঁর পরিবার। পরিবারের বড় ছেলে হিসেবে সাব্বিরকেই জীবনসংগ্রামে নেমে যেতে হয়। নিরুপায় হয়ে সুনামগঞ্জ শহরে টুকটাক টিউশনির পাশাপাশি সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে একটা খণ্ডকালীন প্রকল্পে ঢুকে পড়েন তিনি।
No comments:
Post a Comment